Sunday, December 26, 2010

সৌদি আরব ডায়েরী -১

সৌদি আরব এসেছি প্রায় ৩ মাস হয়ে গেল।চমৎকার কাটছে দিনগুলো। কেউ ভাবতেই পারেনা এখানকার গড় তাপমাত্রা ১৬’ সে.।সবাই জানতে চায় গরমে কেমন আছি... আসলে সৌদি আরবের অন্যান্য সিটি’র সাথে আভা’কে মেলালে চলবে না। “আভা” সমুদ্র সমতল হতে ২২০০ মিটার (৭২০০ফুট)উপরের শহর। জানুয়ারিতে তাপমাত্রা ০’ সে. হবারও রেকর্ড আছে। যতদূর জানা যায়, এ অঞ্চল একসময় ইয়েমেনের অন্তর্ভূক্ত ছিল, আর তা তুর্কি’রা শাসন করতো। এখনও পাহাড়ের উপরে তুর্কিদের বানানো দূর্গ দেখা যায়। সৌদি আরব আভা’কে ইয়েমেনের কাছ থেকে লিজ নিয়ে আর ফেরত দেয়নি। সৌদিদের সাথে বর্তমানে ইয়েমেনের সম্পর্ক ভালোনা, ইয়েমেনকে তারা ব্যর্থ রাষ্ট্র মনে করে।
অনেক বাংলাদেশি আভা’তে আছে। রাস্তা পরিস্কার, রেস্টুরেন্ট, ড্রাইভিং, মুদি দোকান, হাসপাতাল – সব জায়গাতেই আমাদের পদচারনা। তবে ভালো জায়গাগুলো দখল করে আছে পাকিস্তানি আর ইন্ডিয়ানরা। বাংলাদেশিদের পরশ্রীকাতরতাই আমাদেরকে পেছনে ফেলে রেখেছে। আত্নীয় ছাড়া বাংলাদেশিরা অপর বাংলাদেশিকে সাহায্য করতে চায় না, অথচ পাকিস্তানি আর ইন্ডিয়ানরা তার ব্যতিক্রম।
বিগত ৩/৪ বছর ধরে সৌদি ইউনিভার্সিটিগুলো বাংলাদেশ হতে শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছে। এখন বাংলাদেশিদের জন্য সৌদি ভিসা বন্ধ থাকলেও, আমাদের যোগ্যতা ও কর্মনিষ্ঠার কারনে অনেক বাংলাদেশি শিক্ষককতা পেশায় ভিসা পাচ্ছেন।
আমরা অনেক বাংলাদেশি আভা’য় কিং খালিদ ইউনিভার্সিটিতে লেকচারার/ এসিস্টেন্ট প্রফেসর হিসাবে কর্মরত আছি।
আমরা মোটামুটি সবাই একসাথেই থাকি। বৃহঃবার ও শুক্রবার আমাদের ছুটি।প্রায় সময়ই আমরা জম্পেস আড্ডা দেই। আমাদের বন্ধুরা ও কয়েকজন সিনিয়র/জুনিয়র ফেকাল্টি মিলে আমাদের চমৎকার একটা টিম হয়েছে।


আছেন আদিল ভাই, আমাদের মাঝে সিনিয়র, পুরাতন ঢাকা’র মানুষ, দারুণ কৌতুক আর অঙ্গভঙ্গি করে আসর মাতিয়ে রাখেন। শম্পা ভাবির সাপোর্টে আদিল ভাই আরো বেশী উৎসাহ পান।আমি আগে কৌতুক মনে রাখতে পারতাম না, আদিল ভাইয়ের কারনে এখন আমাকেও আসর জমানোর জন্য কৌতুক মনে রাখতে হচ্ছে।


আছে মিলন, ধীর ও শান্ত স্বরে কথা বলে।আর সারাক্ষণ নেটে ভাবির সাথে ঢাকা’য় চ্যাটিং। সে এখন দিন গুনছে, জানুয়ারিতে ভাবি এখানে আসছে।


ইশরাত, শাহনাজ আর দিবা- যখনই ফোন করি, শুনি কেউ না কেউ ঘুমাচ্ছে। দু’দিন হলো আমাদের আরেক বন্ধু মনির তার ওয়াইফ সহ এসেছে- ইংলিশ ডিপার্টমেন্টে জয়েন করবে।

No comments:

Post a Comment